কোভ্যাক্স সুবিধার আওতায় জাপান থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৭ লাখ ৮১ হাজার ৩২০ টিকার ডোজের দ্বিতীয় চালান দেশে পৌঁছেছে।

শনিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জাপানের উপহারের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দ্বিতীয় চালান গ্রহণ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বিমানবন্দরে সেগুলো গ্রহণ করেন।

এর আগে জাপান থেকে টিকার ডোজ বহনকারী ক্যাথে প্যাসিফিকের একটি কার্গো বিমান শনিবার বিকাল সোয়া ৩টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

টিকা গ্রহণের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জাপানের প্রশংসা করে বলেন, জাপান আমাদের পুরনো বন্ধু। জাপান প্রমাণ করেছে তারা আমাদের সত্যিকারের বন্ধু। তারা আমাদের প্রয়োজনের সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছে। জাপান সরকার আমাদের ৩০ লাখ টিকা দিচ্ছে। আমরা এগুলোর মধ্যে আজ (শনিবার) ৭ লাখ ৮১ হাজার ৩২০ ডোজ টিকা পেয়েছি। টিকার জন্য জাপানকে ধন্যবাদ। আমরা জাপানের প্রতি কৃতজ্ঞ। তারা বিনা পয়সায় আমাদের টিকা দিচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় এবং উপদেশে আমরা, আমাদের কলিগরা, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য সচিব, প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী- আমরা সবাই মিলে একযোগে কাজ করি। যার ফলে করোনার কারণে নানাবিধ সমস্যা আসে এবং আমরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করি। আমরা অত্যন্ত সাফল্যজনকভাবে মোকাবিলা করেছি।’

ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, দুনিয়ার কোথাও শুনেছেন যে এক সপ্তাহে এক কোটির বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে? এটা কিন্তু মুখের কথা নয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর মিলে প্রতি সপ্তাহে এক কোটি টিকা দেবে। আমাদের টিকার অভাব আর নেই। সরবরাহ ঠিক আছে। সপ্তাহে এক কোটি করে দিলে দুই মাসে অর্ধেক জনগোষ্ঠীর টিকা দেওয়া হয়ে যাচ্ছে। অনেক পণ্ডিত নেতিবাচক লোকেরা বলে পাঁচ-ছয় বছর লাগবে। দুই মাসের মধ্যে অর্ধেক হয়ে যাবে। এই যে কর্মদক্ষতা, তার জন্য আমাদের সবাইকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশংসা করা উচিত। তার অত্যন্ত চমৎকার কাজ করছে।

করোনাকে বৈশ্বিক সমস্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, করোনা খুব বড় সমস্যা। এটা বৈশ্বিক সমস্যা। এটা একটি দেশের পক্ষে সমাধান করা সম্ভব না। বিশ্বের সবগুলো দেশে টিকা নিশ্চিত না করতে পারলে কেউই নিরাপদ নয়।

করোনা মোকাবিলায় সরকার সফল জানিয়ে ড. মোমেন বলেন, আমরা করোনা ভালোভাবে মোকাবিলা করেছি। সাফল্যজনকভাবে মোকাবিলা করেছি। সপ্তাহে এক কোটির বেশি লোককে টিকা দিচ্ছি আমরা। এটা দুনিয়ার কোনো দেশে দেখেছেন? আমরা প্রতি সপ্তাহে এক কোটি করে টিকা দেব। এতে দেখা যাবে, দুই মাসে অর্ধেক লোকের টিকা দেওয়া হয়ে যাবে। অনেক পন্ডিতেরা বলেন, পাঁচ বছর লাগবে। অনেকে নেতিবাচক কথা বলেন। আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যেভাবে টিকা নিয়ে কাজ করছে তাদের ধন্যবাদ দেওয়া উচিত।

করোনা যুদ্ধে দেশের সবাইকে দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এখন করোনা যুদ্ধ চলছে, এতে সবার দায়দায়িত্ব আছে। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত। আমি আগে মাস্ক পরতাম না, এখন বাধ্য হয়ে মাস্ক পরি। প্রত্যেককে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। তাহলে কিন্তু হাসপাতালে ভিড় হবে না। আর আমরা সারাদেশকে হাসপাতাল বানাতে পারব না।

প্রসঙ্গত, শনিবার জাপানের উপহারের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার দ্বিতীয় চালানে ৭ লাখ ৮১ হাজার ৩২০ ডোজ টিকা দেশে পৌঁছেছে। আগামী ৩ আগস্ট আসবে উপহারের আরও ৬ লাখ ১৬ হাজার ৭৮০ ডোজ টিকা।

এর আগে, গত ২৪ জুলাই জাপানের উপহারের অ্যাস্ট্রাজেনেকার ২ লাখ ৪৫ হাজার ২০০ ডোজ টিকার প্রথম চালান দেশে পৌঁছায়। সব মিলেয়ে এখন পর্যন্ত জাপান থেকে ১০ লাখ ২৬ হাজার ৫২০ ডোজ টিকা দেশে এসেছে।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন