যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ‘শুদ্ধাচার পুরস্কার’ পেয়েছেন ক্রীড়া পরিদপ্তরের পরিচালক আ ন ম তরিকুল ইসলাম। কর্মক্ষেত্রে শুদ্ধাচার চর্চার স্বীকৃতি হিসেবে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এ পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
তরিকুল ইসলামের মাধ্যমে এবারই প্রথম শুদ্ধাচার পুরস্কার পেল ক্রীড়া পরিদপ্তর। এর আগে কখনো দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য খ্যাত এই প্রতিষ্ঠানের কেউ এ পুরস্কার পায়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক অফিস আদেশে চলতি অর্থবছরের শুদ্ধাচার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।
অফিস আদেশে বলা হয়, জাতীয় শুদ্ধাচার (সংশোধন) নীতিমালা অনুযায়ী, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর বা সংস্থাপ্রধান, মন্ত্রণালয় গ্রেড-২ হতে গ্রেড-৯, গ্রেড-১০ হতে গ্রেড ১৬ এবং গ্রেড-১৭ হতে গ্রেড-২০ ভুক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ শুদ্ধাচার পুরস্কার দেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে চলতি অর্থবছরও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।
শুদ্ধাচার পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্রীড়া পরিদপ্তরের পরিচালক আ ন ম তরিকুল ইসলাম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের ২২তম ব্যাচের এক কর্মকর্তা। তিনি ২৯ জুলাই ১৯৭৫ সালে খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলাধীন চাঁদখালী ইউনিয়নের ধামরাইল গ্রামে একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম চাঁদখালী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন এবং মা সখিনা ইসলাম একজন গৃহিণী।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগ থেকে অনার্স এবং মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। কর্মজীবনে প্রথমে তিনি ২০০৩ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে যোগদান করে রাংগামাটি পার্বত্য জেলার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার ও ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন।
তিনি বাগেরহাট এবং সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটা উপজেলার নির্বাহী অফিসার দায়িত্ব পালনকালে তরিকুল ইসলাম ইছামতি নদীর ভাঙন রোধে নদীর তীর ঘেঁষে যুগ যুগ ধরে অবৈধ দখলে থাকা সরকারি জমি অবৈধ দখলমুক্ত করে বনজ ও ঔষধি গাছের চারা সারিবদ্ধভাবে রোপণের মাধ্যমে সুন্দরবনের আদলে মিনি সুন্দরবন খ্যাত রূপসী দেবহাটা ম্যানগ্রোভ পর্যটন কোণে সৃষ্টি করেন, যেটি পরে জনপ্রশাসন পদকে ভূষিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্ব পালন শেষে তিনি ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের সিনিয়র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তারপর তিনি ঢাকা ওয়াসার সচিব এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে উপসচিব পদে কর্মরত ছিলেন। ক্রীড়া পরিদপ্তরে যোগদানের আগে তিনি সবশেষ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তরিকুল ইসলাম ২০২৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ক্রীড়া পরিদপ্তরের পরিচালক পদে যোগদান করেন।
শুদ্ধাচার পুরস্কারপ্রাপ্তির বিষয়ে তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি পুরস্কার আনন্দের। তবে কাজের স্বীকৃতি পেলে দায়িত্ববোধে নতুন মাত্রা যোগ করে। আমি বিশ্বাস করি, এই স্বীকৃতি ভবিষ্যতে অর্পিত দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
চলতি অর্থবছরে তরিকুল ইসলামসহ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় আরও ৬ জনকে শুদ্ধাচার পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী, নীতিমালা অনুযায়ী, শুদ্ধাচার পুরস্কার পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ, ক্রেস্ট ও সনদ পাবেন।
অন্যান্য পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাজী মোশতাক জহির, যুগ্মসচিব মোহাম্মদ সানাউল হক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. লোকমান হোসাইন ও মো. শামীম আহমেদ, অফিস সহায়ক মো. ইনতাজ আলী ও মো. আব্দুল হান্নান।