ছাত্রজীবনে জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকতে হবে : শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে আইজিপি

দ্বারা zime
০ মন্তব্য 163 দর্শন

 

 

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বিপিএম-বার বলেছেন, ‘ছাত্রজীবনে জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকতে হবে। ইসলাম কখনও জঙ্গিবাদকে সমর্থন করে না। জঙ্গিবাদ ইসলামের শত্রু। তাদের হাতেই সবচেয়ে বেশি মুসলমানরা নিগৃহীত হয়েছে, সবচেয়ে বেশি মুসলমানদের রক্ত ঝরেছে, সবচেয়ে বেশি খুন হয়েছে। একইসঙ্গে তিনি বলেন, সচেতনভাবে ধর্মীয় মূল্যবোধের চর্চা করতে হবে।

পুলিশ প্রধান আরও বলেন, আমাদের জাতির ভবিষ্যৎ তোমরাই। তোমরা ভাগ্যবান তোমরা স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছ। এখন আমাদের শিক্ষার্থীরা বিদেশে পড়তে গেলে পড়া শেষ করে দেশে চলে আসে। কারণ বাংলাদেশ এখন অমিত সম্ভাবনার দেশ।

আইজিপি বলেন, চার-পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে দারিদ্র্য বিদায় নেবে। দারিদ্র্য যে কত ভয়ানক তা যারা না দেখছে তারা বিশ্বাস করবে না। অর্ধাহারে-অনাহারের কী জীবন তা না দেখলে বিশ্বাস হবে না। এক সময় এই বস্তিবাসী ডাস্টবিন থেকে খাবার টোকাইয়ে খেতো। এগুলো এখন নেই।

তিনি বলেন, গত ১২ বছরে বাংলাদেশে যুগান্তকারী পরিবর্তন হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেছন। গত ১২ বছরে শিক্ষায় বেশি বরাদ্দ হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বিনা বেতনে পড়ানো হচ্ছে। বই ফ্রি পাচ্ছে। আমরা বই পেতাম তিন চার মাস পর। এখন এই পরিস্থিতি নেই।

মানবিক গুণাবলী থাকতে হবে উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকতে হবে। এজন্য তোমার ইসলামকে জানতে হবে। অনেক বই রয়েছে, সেগুলো পড়তে হবে। তবে ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে দুলাইন নিয়ে নয়। ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষায় ধর্মীয় গ্রন্থ পাওয়া যায় সেগুলো পড়ে হবে।

যৌথ পরিবার ভেঙ্গে যাওয়াতে শিশুদের একাকীত্ব বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের যৌথ পরিবারগুলো ভেঙে গেছে, কারণ আমাদের অর্থনৈতিক কারণ। যৌথ পরিবারের একটা সুবিধা ছিল এখানে মুরব্বিদের কাছ থেকে অনেক কাউন্সিলিং পেতে শিশুরা। এটা এখন হয় না।

আইজিপি বলেন, আমি আমার সন্তানদের দিয়ে বুঝি সে কত একাকীত্ব বোধ করে। কিন্তু যদি যৌথ পরিবার থাকতো তাহলে তার দাদা দাদি, নানা নানী কাজিন চাচা-চাচি থাকতো। তাহলে তাদের সঙ্গ পেতো সে।

তিনি বলেন, ধর্মীয় চর্চা, রীতি নীতি অনুশাসন আমাদের মানতে হবে বলেও তিনি শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, তুমি এই জাতির গর্ব হও, মাদক থেকে দূরে থাকো। তোমার ভেতরে আত্মমর্যাদা থাকতে হবে, বাংলাদেশের নাগনিক হিসেবে তোমার অহংকার থাকতে হবে। দেশের অতীত ইতিহাস শ্রদ্ধা জানাতে হবে। বাংলাদেশ জাতি হিসেবে অহংকার করার অনেক কিছু আছে। আর যদি মর্যাদাবোধ না থাকে তাহলে দেশের বাইরে গিয়ে অপপ্রচার চালাবে। কুলাঙ্গররা এগুলো করে।

সোমবার (১৫ মার্চ) সকালে রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সভাপতিত্ব করেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের ডিআইজি ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান।

তিনি বলেন, ‘ছাত্রজীবন থেকেই সচেতন হওয়া জরুরি। এ সময় জঙ্গিবাদ থেকে দূরে থাকতে হবে। পিতামাতাকে খেয়াল রাখতে হবে সন্তানদের। জঙ্গিদের হাতেই সবচেয়ে বেশি মুসলমানরা নিগৃহীত হয়েছে, সবচেয়ে বেশি মুসলমানদের রক্ত ঝরেছে, সবচেয়ে বেশি খুন হয়েছে। একইসঙ্গে সচেতনভাবে ধর্মীয় মূল্যবোধের চর্চা করতে হবে।’

আইজিপি আরও বলেন, ‘মাদক থেকেও দূরে থাকতে হবে। অঙ্কুরেই শেষ করে দেয় মাদক। আমাদের ভেতরে আত্মমর্যাদা থাকতে হবে। দেশের প্রতি সম্মান থাকতে হবে। দেশের অতীত-ইতিহাসকে জানতে হবে। বাংলাদেশের জাতি হিসেবে অহংকার করার মতো অনেক কিছু আছে।’

‘কিছু কুলাঙ্গার দেশের বিরুদ্ধে কথা বলে, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কথা বলে। একজন সভ্য, ভালো মানুষ কখনো অশ্লীল কথা বলতে পারে না। বাংলাদেশের মানুষ হিসেবে তাদের কোনো ইজ্জত নেই। তারা পরগাছা, পরগাছাদের আমাদের দরকার নেই।’

নগরবাসীকে অনুরোধ করে আইজিপি বলেন, ‘ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা দেয়া আমাদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। ১৭-২৬ তারিখ পর্যন্ত খুব বেশি প্রয়োজন নাহলে বের না হওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। পাঁচ দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানেরা আসবেন তাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেবে ডিএমপি।’

এই কদিন রাজনৈতিক দলগুলোকে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি না দেয়ারও জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস ফাউন্ডেশন শিক্ষাবৃত্তি ২০২০ মোট ১২৪ শিক্ষার্থীকে ১৩ লাখ ৬ হাজার টাকা দেওয় হয়। এদের মধ্যে পিএসসির জনপ্রতি ১২ হাজার, জেএসসি ১০ হাজার এসএসসি ১২ হাজার, ‘ও’ লেভেল ১০ হাজার এবং উচ্চ শিক্ষাবৃত্তি জনপ্রতি ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত আইজি (প্রশাসন ও অপারেশনস্) ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান ও ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) কৃষ্ণ পদ রায় প্রমুখ।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন