পুলিশের মানবিক অভ্যুদয়, উজ্জল প্রঞ্জাময় চৈতন্যের প্রজ্বলনে উদ্ভাসিত আইজিপি

দ্বারা zime
০ মন্তব্য 232 দর্শন

 

তাঁর চিন্তার প্রান্তর যেন অতল গহীনসম! নৈরাশ্যে নিপতিত হননি কোনদিন। সময়ে সময়ে নিজের সাহস, বুদ্ধিমত্তা, সংগ্রাম আর নেতৃত্বগুণে উন্মোচন করেছেন অজস্র আলোকরেখা। ডিএমপি কমিশনার বা র‌্যাব প্রধান- নিজের একেকটি বর্ণাঢ্য অধ্যায়ে ছড়ানো তাঁর কর্মের দ্যুতি। জীবনভূমের প্রতিটি আলপথে বৈচিত্র্য, সৃজনশীলতা আর নান্দনিকতায় উজ্জ্বল ও প্রজ্ঞাময় চৈতন্যের প্রজ্বলনে উদ্ভাসিত করেছেন নিজেকে।

পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবেও ড.বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার) নিজ বাহিনীর সদস্যদের মাঝে পেশাদারিত্বের পাশাপাশি মানবিকতার প্রোজ্জ্বল আভা প্রতিটি প্রাণে ছুঁইয়ে দেওয়ার মানসিকতা মস্তিষ্কে গেঁথে দিচ্ছেন প্রতিনিয়তই। দেশজুড়ে মানবিকতায় বিস্তৃত বিভায় তিনি এঁকেছেন অনন্য এক ক্যানভাস।

নিজের সমগ্র সত্তায় প্রতিবাত হয়েছে সোয়া দুই লাখ পুলিশ সদস্যের আচার-আচরণ, পেশাগত দক্ষতা, নৈতিকতা, আর অপরিমেয় বিশ্বাসের চিন্তা-চেতনা। নিজের স্বাধীন সজীব ভাবঘনতায় আধুনিক জনকাঙ্খার আলোকে নিজ বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের মানসপটে জোরালো ও শক্তিশালী করেছেন সংবেদনশীল এবং মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন ভাবমূর্তির।

আইজিপি শুভ্রতার উজ্জ্বলতায় নিষ্ঠুরতা ও শারীরিক ক্ষমতার পরিবর্তে আইনি ক্ষমতা প্রয়োগের কঠোর বার্তা দিচ্ছেন একদিন-প্রতিদিন। ড.বেনজীরের চেতনমঞ্চে আশাবাদী গাঢ় অনুভূতির ঢেউ তুলে করোনাকালে পাওয়া পুলিশের প্রতি মানুষের নিবিড় ভালোবাসা। যারপরেনাই বারবার নিজ বাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন ভালো ব্যবহারেই ভালোবাসা প্রাপ্তির মাহাত্ন্যকে। প্রযুক্তিনির্ভর ও জ্ঞানভিত্তিক পুলিশি ব্যবস্থা গড়ে তোলারও টার্গেট নিয়েছেন।

এ লক্ষ্যপূরণের মাধ্যমে পুলিশের কাজে দুর্নীতির রাশ টেনে ধরার পাশাপাশি নিশ্চিত করতে চান স্বচ্ছতাও। নিজেদের পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ হতে দৃঢ় সংকল্প করে তুলেছেন বাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে। সংগঠনকে ভালোবেসে সম্মান নিয়ে চাকরি করার মন্ত্রেও উজ্জীবিত করেছেন।

কালের আলোর সঙ্গে আলাপে অভিন্ন ভাষায় আইজিপি ড.বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘সময় এসেছে পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। জনগণকে নির্মোহ সেবা দিতে হবে। আর এটি সম্ভব হলেই প্রতিটি পুলিশ সদস্য শ্রদ্ধা পাবে, ভালোবাসা পাবে।’

জানা যায়, পুলিশ প্রধান হিসেবে চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল দায়িত্বভার গ্রহণ করেন ড.বেনজীর আহমেদ। এ সময়ে যোগ্য ‘অভিভাবক’ হিসেবে যেমন আলোচিত হয়েছেন তেমনি সঙ্কটময় বিভিন্ন পরিস্থিতিও পেশাদারিত্ব ও দৃঢ় মনোবল নিয়ে সামাল দিয়ে নিজের বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন। পুলিশকে খোলনলচে পাল্টে নতুন চেহারায় উপস্থাপনে পাঁচটি লক্ষ্য নির্ধারণ করে এগোচ্ছেন তিনি।

দুর্নীতি রোধ, মাদকমুক্তি, পুলিশের নিষ্ঠুরতা বন্ধ, বিট পুলিশিং ও পুলিশ সদস্যদের কল্যাণ- এসব লক্ষ্য বাস্তবায়নে কার্যকর সব পদক্ষেপও গ্রহণ করেছেন। রুটিন ওয়ার্কে নিজেকে সীমাবদ্ধ না রেখে ধারাবাহিকভাবে কেন্দ্র থেকে প্রান্ত পুলিশ সদস্যদের মানসিকতার আমুল পরিবর্তনে বিভিন্ন জেলা ও মহানগরী সফর করছেন। ডিএমপি থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন রেঞ্জের, মেট্টোপলিটনের থানার ওসি এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে মতবিনিময় করছেন।

থানা যেহেতু পুলিশী সেবার দর্পণ এজন্য গণমুখী ও জনকল্যাণকর থানা গড়ে তোলার মাধ্যমে ওসিদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছেন ড.বেনজীর আহমেদ।

ওসিদের কাছে কেউ ঘুষ চাইলে সরাসরি তাকে জানাতেও বলেছেন। স্পষ্ট ভাষায় পুলিশের এ সর্বোচ্চ কর্মকর্তা বলে দিয়েছেন, ‘পুলিশের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি থাকবে না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে পুলিশ বাহিনী প্রধানমন্ত্রীর নীতি-কৌশল অনুযায়ী যুদ্ধে অবতীর্ণ থাকবে। পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে পুলিশের মর্যাদা ও সম্মান অক্ষুণ্ন রাখতে হবে।’

দুই দিন আগে বরিশাল জেলা পুলিশ লাইন্সে বরিশাল রেঞ্জ, বরিশাল মেট্রোপলিটন ও অন্যান্য পুলিশ ইউনিটের প্রায় আড়াই হাজার পুলিশ সদস্যের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পুলিশের আইজি ড.বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হতে পারেন ওই থানা এলাকার সামাজিক নেতা। মানুষ তাকে ভালোবাসবে, তার কথা শুনবে। তার ফোর্সকে ভালোবাসবে, পুলিশকে ভালোবাসবে।

পুলিশের হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা হওয়ার সুযোগ রয়েছে। ওসি হবেন তার এলাকার হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা, বিট পুলিশের কর্মকর্তা হবেন ওই বিটের হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা। পুলিশ বাহিনীতে ভালো কাজ করার অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। এ সম্ভাবনা ও আইনি সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে পুলিশকে মানুষের প্রথম ভরসাস্থলে পরিণত হতে হবে।’

প্রচ্ছন্ন বাস্তবতায় প্রতিনিয়ত ড.বেনজীর আহমেদের হৃদয়ে গভীরভাবে রেখাপাত করে দুর্নীতিমুক্ত, মাদকমুক্ত, জনগণের প্রতি মানবিক আর বিট পুলিশিং। গভীরভাবে বিশ্বাস করেন একদিন সব বিপন্নতা ঠেলে উঠে আসবে এক অনাস্বাদিত আলোকসত্তা। নিজের নির্ধারিত এসব লক্ষ্যপূরণের মাধ্যমেই দেশের সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে চান নিষ্কলুষ পুলিশি সেবা।

সপ্তাহখানেক আগে ঢাকা রেঞ্জের ১৩টি জেলার পুলিশ সুপার ও অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিশেষ সভায় এ পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেন, ‘জনগণের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা ও নির্যাতন করার কোনো সুযোগ নেই। জনগণের প্রতি যে কোনো প্রকার নির্দয় আচরণ বন্ধ করে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নিতে হবে।’

‘যেন কোনো প্রকার দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ না করতে হয়, সে জন্য বর্তমান সরকার সব সরকারি পেশাজীবীর সুযোগ-সুবিধা ও বেতনভাতা অনেক বাড়িয়েছে। তাই আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ জীবন-যাপন করতে হবে। পুলিশের কোনো সদস্য দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবে না। পুলিশের কোনো সদস্য মাদক গ্রহণ করবে না, মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকবে না, মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে না’-যোগ করেন পুলিশ প্রধান।

নিবিড় চাঁদের আলোর মতো জনসেবায় নিবেদিত পুলিশ সদস্যদের কল্যাণও নিশ্চিত করতে দুরতিক্রম্য অধ্যায়কে ড.বেনজীর আহমেদ প্রজ্বলন্ত করছেন অকৃত্রিম সৌকর্যে। নিজের চেতনার নিবিড় প্রসন্নতায় হৃদয়ের বিভায় নিজেকে নিজ বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের সঙ্গে মিশিয়েছেন একই সমান্তরালে। তাঁর হৃদয় স্পর্শক চিত্রকল্পে যেন নতুনের শোভিত ভাবনা। আর তাইতো বিট পুলিশিংয়ের ব্যাপকতায় বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছেন আইজিপি।

বলেছেন, ‘পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সারাদেশকে ৬ হাজার ৯১২টি বিটে ভাগ করে বিট পুলিশিং চালু করা হয়েছে। এর ফলে বিট এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা ও এলাকার প্রতিটি থানা সম্পর্কে জানতে পারবে, তাদের সমস্যা চিহ্নিত করতে পারবে। ফলে ওই এলাকার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও আইনি সেবা দেওয়া সহজ হবে।’

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, অ্যাকটিং এডিটর, কালের আলো ডটকম। 





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন