সিটিজেন জার্নালিস্ট(জিমি):
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত, ইতিহাসের নির্মমতম হত্যাযজ্ঞের স্বীকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনস। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অতর্কিত আক্রমণে বিহব্বল হলেও পুলিশের রাইফেল থেকেই গর্জে উঠে প্রতিরোধের প্রথম বুলেট, সূচিত হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের। সেই ক্ষণ একদিকে যেমন বেদনার স্মৃতি অন্যদিকে তা বাংলাদেশ পুলিশের জন্য গৌরবময় এক ইতিহাস। প্রত্যক্ষদর্শী এবং প্রথম প্রতিরোধ যোদ্ধাদের স্মৃতিতে সেইরাত আজও জাগরুক। সেই স্মৃতি অম্লান বেদনার, অক্ষয় প্রেরণার ঘটনাপ্রবাহ স্থান পেয়েছে এডিশনাল ডিআইজি হাবিবুর রহমান সম্পাদিত “মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ “গ্রন্থটিতে।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে রাজারবাগের পুলিশ সদস্য কর্তৃক প্রথম প্রতিরোধের বীরত্বগাঁথার সেই ইতিহাস লিখেছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও অভিজ্ঞ বিদগ্ধজনেরা। ২৫ মার্চ কালরাতে রাজারবাগের বিস্মৃতপ্রায় সেই ঘটনাকে সকলের নিকট উপস্থাপনার লক্ষ্যে প্রথম প্রতিরোধ যোদ্ধাদের বর্ণনা এবং তাদের নিকটাত্মীয়দের কাছ হতে সংগৃহীত লেখনীতে উঠে এসেছে অতি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং ঘটনাপ্রবাহ। সেই সাথে রাজারবাগের পাশ্ববর্তী আবাসিক এলাকায় বসবাসরত কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির স্মৃতিকথাও সংযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কাজ করা বিদগ্ধ কয়েকজনের অভিজ্ঞতার আলোকে লিখিত কয়েকটি নিবন্ধও এই গ্রন্থে রাখা হয়েছে। প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধযুদ্ধের ইতিহাসের বন্তুনিষ্ঠ তথ্যের সমৃদ্ধ ভান্ডার এবং অত্যন্ত মুল্যবান দলিল হিসেবে সমাদৃত হবে ‘মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ’ শীর্ষক এই গ্রন্থটি। নিঃসন্দেহে বইটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের এক গৌরবময় প্রতিরোধযুদ্ধের বন্তুনিষ্ঠ বয়ান।

বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কর্তৃক প্রকাশিত এই বইটি এখন বইমেলায়। পাওয়া যাচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং পাঞ্জেরী প্রকাশনীর স্টলে।

“মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ ” বইটির সম্পাদক হাবিবুর রহমানের জন্ম ১৯৬৭ সালে গোপালগঞ্জ জেলার চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামে। ১৭তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে তিনি সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি এডিশনাল ডিআইজি হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরে কর্মরত আছেন। বহুমুখী প্রতিভা ও অসাধারণ মানবিক গুণাবলীর অধিকারী হাবিবুর রহমান সফলভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সমাজসেবা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বিশেষত বাংলাদেশ পুলিশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সমুজ্জ্বলকরণের ক্ষেত্রে এক বিরল নজির স্থাপন করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে পুলিশের ভূমিকা শুধু বাংলাদেশ পুলিশ নয়, দেশের সীমা ছাড়িয়ে সমগ্র বিশ্বে উদ্ভাসিত করার মানসে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’।
সূত্রঃ ডিএমপি নিউজ।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন