আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন এবং অপরাধীদের গ্রেফতারসহ দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যগণ অত্যন্ত গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করে থাকে। যে কোন জাতীয় দুর্যোগে বাহিনীর সদস্যগণের ধৈর্য্য, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ কার্যক্রম সকল মহলে প্রশংসিত। কর্তব্য পালন করতে গিয়ে প্রতি বছর অনেক পুলিশ সদস্য নিহত হয়। দায়িত্ব পালনকালে তাঁরা আত্মত্যাগের যে মহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন তা গোটা পুলিশ বাহিনীকে গৌরবান্বিত করে। কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত বাংলাদেশ পুলিশের সে সকল সদস্যদের আত্মত্যাগ ও গৌরবময় অবদানকে স্মরণ করে প্রতিবছর দেশব্যাপী সমস্ত পুলিশ ইউনিটে ১ মার্চ “পুলিশ মেমোরিয়াল ডে” পালিত হয়।
আজ সোমবার (১ মার্চ, ২০২১)সকাল ১১ টায় মিরপুর পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট পুলিশ লাইন্সে অনুষ্ঠিত সম্মাননা প্রদান ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপি কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার)। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।
আলোচনা সভার শুরুতে মৃত্যুবরণকারী পুলিশ সদস্যদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা ও আত্মার মাগফেরাত কামনায় মোনাজাত করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, মার্চ মাস আমাদের স্বাধীনতার মাস। স্বাধীনতার প্রথম প্রহরে যেসব পুলিশ সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের আত্মত্যাগ কখনো ভোলার নয়। আমরা ২০১৭ সাল হতে ধারাবাহিকভাবে “পুলিশ মেমোরিয়াল ডে” পালন করে আসছি। প্রতিবছর আইনশৃঙ্খলা ও কর্তব্য পালন করতে গিয়ে আমাদের অনেক সদস্য নিহত হয়ে থাকেন। করোনাকালে আমাদের ৮৬ জন পুলিশ সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। বর্তমান আইজিপি মহোদয় বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। মৃত্যুবরণকারী পুলিশ সদস্যদের পরিবারের সাথে এমন একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে আমি গর্ব অনুভব করছি।
সভাপতির বক্তব্যে ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ বলেন, আমরা সবাই জানি পুলিশের চাকরি হচ্ছে ত্যাগের ও গৌরবের চাকরি। মানবতার জন্য, দেশের জন্য ও মাটির জন্য জীবন বিলিয়ে দেয়ার জন্য সেই প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে আসা। সেই প্রত্যয় ও দায়িত্ববোধ দেশের কাছে, জাতির কাছে ও আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ পুলিশ প্রমাণ করেছে।ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ অর্থাৎ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিরোধ ব্যবস্থার সূচনা করেছিলো বাংলাদেশ পুলিশ। তারা তাদের জীবন বির্সজণ দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য লড়েছিলো। বর্তমান মহামারী করোনাকালে বিশ্ব যখন দিশেহারা তখন মানুষের কাছে আলোর দিশারী, পথ প্রদর্শক, পরিচালক ও ত্রাতা হিসেবে কাজ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ।
আলোচনা সভা শেষে সারা বাংলাদেশে নিহত ২০৮ জন সদস্যদের মধ্য হতে ০৭ জন পুলিশ সদস্যদের পরিবারের মধ্যে শুভেচ্ছা উপহার সামগ্রী হস্তান্তর করা হয়। আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয় “পুলিশ মেমোরিয়াল ডে ২০২১” এর কর্মসূচি।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) মোঃ মনিরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম (বার), অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশনস্)কৃষ্ণ পদ রায় বিপিএম (বার), পিপিএম (বার), অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা)এ কে এম হাফিজ আক্তার বিপিএম (বার) ও অতিরিক্ত পুলিশ কশিনার (ট্রাফিক) মোঃ মুনিবুর রহমান, যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণ, পুলিশ সুপার ঢাকা জেলা ও ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনারগণসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।
-ডিএমপি নিউজ।