স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি আজ বৃহস্পতিবার (০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩) সকালে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ও ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন কোর্সের সনদ বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বলেন, সিআইডি আজ জনগণের আস্থা ও ভালবাসার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন সিআইডি বাংলাদেশ পুলিশের প্রযুক্তি, বিশেষায়িত জ্ঞান ও দক্ষতা সমন্বিত সর্বোচ্চ তদন্ত সংস্থা। জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নির্মম হত্যাকান্ড, সংসদ সদস্য আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যাকান্ড, পিলখানা হত্যাকান্ড, চট্টগ্রামের দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলা এই বিশেষায়িত তদন্ত সংস্থা অত্যন্ত দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সাথে তদন্ত করেছে। অর্গানাইজড ক্রাইম, ফরেনসিক বিভাগসহ অন্যান্য ইউনিটগুলোর কর্মদক্ষতা ও কর্মতৎপরতায় সিআইডি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, মো: আমিনুল ইসলাম খান, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ, চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম ও এসবি প্রধান, অ্যাডিশনাল আইজি, মোঃ মনিরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সিআইডি প্রধান, অতিরিক্ত আইজি, মোহাম্মদ আলী মিয়া বিপিএম, পিপিএম।অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সদ্য পদন্নোতি প্রাপ্ত অতিরিক্ত আইজিপি মো:হুমায়ুন কবির,সিআইডির ডিআইজি আবু কালাম সিদ্দিক,সিআইডির ডিআইজি মো: হাবিবুর রহমান বিপিএম, সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের ডিআইজি নাজমুল আলম প্রমুখ।
জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব বলেন, আধুনিক তদন্ত প্রশিক্ষণ ও জনসচেতনতার মাধ্যমে মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধ কমিয়ে আনা সম্ভব। তিনি আরো বলেন ভারতের তদন্ত সংস্থা সিবিআই ও আমেরিকান তদন্ত সংস্থা এফবিআই এর মত সিআইডিও বিশ্ব পরিমন্ডলে সুনাম অর্জন করবে।
ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের জন্য প্রয়োজন স্মার্ট গভর্নেন্স। আর স্মার্ট গভর্নেন্সের জন্য প্রয়োজন স্মার্ট পুলিশ গড়ে তোলা। তিনি আরো বলেন, সিআইডি গুণগতমানের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে অফিসারদেরকে দক্ষ করে তুলছে। ফলে তদন্তের মানে ব্যাপক উৎকর্ষ সাধিত হচ্ছে। সিআইডির তদন্তের নৈপূণ্য বিবেচনা করে মানি লন্ডারিং মামলা তদন্তের দায়িত্ব সিআইডির উপর অর্পণ করা হয়েছে।
এসবি প্রধান বলেন, বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত অপরাধ মানিলন্ডারিং, যা প্রতিরোধ ও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে টেকনোজিভিত্তিক তদন্ত করতে হবে। এই জন্য ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন প্রশিক্ষণ কোর্সটি প্রসংশার দাবিদার।
সিআইডি প্রধান বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট পুলিশিং এর বিকল্প নাই। স্মার্ট পুলিশ গড়ার লক্ষ্যে গত ১১/১০/২০২২ খ্রিঃ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ও ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন কোর্সের কার্যক্রম শুরু করা হয়। ৪ মাস ব্যাপী পরিচালিত এই কোর্সের মাধ্যমে ৪৫০ জনকে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ও ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশনের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
সিআইডির তদন্ত কার্যক্রমকে গতিশীল করতে ডিএনএ ফরেনসিক ল্যবের আধুনিকায়ন, ক্রাইম সিন ইউনিটের কার্যক্রম বৃদ্ধি, অর্গানোগ্রাম অনুমোদন এবং হাজতখানা নির্মানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করেন। তিনি আরো বলেন, মালিন্ডারিং, হুন্ডিসহ অন্যান্য ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য ইউনিটের সাথে সমন্বয় করে সিআইডি যৌথভাবে অভিযান পরিচানা করছে।
মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ ও ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে ০৭টি ব্যাচের ৪৫০ জন প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্য থেকে মেধাতালিকার ভিত্তিতে ২১ জন এবং ০৪ জন প্রশিক্ষককে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। এই অনুষ্ঠানে সিআইডি’র কর্মকর্তাদের উপস্থাপিত গবেষণা সমূহের সারসংক্ষেপ সম্বলিত “রিসার্চ অ্যাবস্ট্রাক্ট” এর মোড়ক উম্মোচন করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষক, প্রশিক্ষণার্থীসহ অন্যান্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। আগত অতিথিবৃন্দকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন পূর্বক অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন জনাব মোঃ মাইনুল হাসান পিপিএম, ডিআইজি (এইচআরএম), সিআইডি।