পুনাক কে এক স্বতন্ত্র সত্তায় উজ্জ্বল এবং স্বমহিমায় শোভিত করেছেন পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জা

দ্বারা zime
০ মন্তব্য 700 দর্শন

 

সৃষ্টিশীল-সৃজনশীল মানুষের ভিন্নতর এক অন্বেষণ থাকে। থাকে অমরত্বের আত্মগত এক স্পৃহা। ঠিক সেভাবেই যেন বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতিকে (পুনাক) এক স্বতন্ত্র সত্তায় উজ্জ্বল এবং স্বমহিমায় শোভিত করেছেন পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জা। করোনার দহন যন্ত্রণার বিপর্যস্ত সময়টিতে মানবিক বিপুল বৈভব ধারণ করেছেন।

সচেতন বিবেকের দায় থেকেই পুলিশ পরিবার ছাপিয়ে নানাভাবে চলমান দুর্যোগে এগিয়ে আসা মানবিকবোধসম্পন্ন সব মানুষকে সম্মানিত করেছেন। সঙ্কটে হাসফাঁস করা তৃণমূলের অসহায় ও দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নিজের গভীর অন্তর্দৃষ্টি ও দূরদর্শিতার মিলিত রসায়নে সার্বভৌম মানবিক মানসিকতাকেই উর্ধ্বে স্থান দিয়েছেন পুলিশপ্রধান ড.বেনজীর পত্নী।

অন্তরে সঞ্চিত সদিচ্ছার প্রাবল্যেই প্রাণঘাতী করোনার বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতেও পুনাককে এগিয়ে নিতে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন। নতুন সময়ে নতুন ভাবনায় আন্দোলিত হয়ে ৩৫ বছর বয়সী, ঐতিহ্যবাহী সংগঠনটিকে উদ্ভাসিত করেছেন অন্য আলোয় নবতর মাত্রায়। পরিপূর্ণ গৌরবে নিজেও জ্বলেছেন নক্ষত্রের মতোই। অসহায় নারীদের পাশে থেকেছেন। আবার নানা উদ্ভাবনী কার্যক্রমও হাতে নিয়েছেন। পুনাক পরিণত হয়েছে এক বিদগ্ধ সমাজ পর্যবেক্ষকেও।

প্রায় সোয়া দুই লাখ সদস্যের বিশাল পুলিশ পরিবারের সব পর্যায়ের নারী সদস্যদের সার্বিক কল্যাণে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে গত এক বছরে এক শক্তপোক্ত অবস্থানে দাঁড় করিয়েছেন পুনাককে। যোগ্য অভিভাবকের মতোই মেধার কিরণের ঝলকানি আর প্রাণময়ী উষ্ণতায় মেলে ধরেছেন নিজেকে। নিজেদের মাঝে সম্প্রীতির পাশাপাশি পুনাককে দেশ ও সাধারণ মানুষের পাশে রেখেছেন সব সময়। শৈল্পিক রুচিবোধের মাত্রায় হয়েছেন নব দিগন্তপ্রসারী।

পুনাক সভানেত্রী হিসেবে গত এক বছরে প্রতিটি সূর্যোদয়কেই যেন সজ্ঞানভারেই অভিবাদন করেছেন জীশান মীর্জা। আবার বিদায়ী বছরের শেষ সূর্যাস্তকেও ফুরফুরা মেজাজে পরিচিত বন্ধুর মতোই বিদায় জানিয়েছেন। গত এক বছরের সাফল্যময় পথচলার পর ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জেও সফল হতে এবং পুনাকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে দীর্ঘ মেয়াদী এক পরিকল্পনাও প্রণয়ন করেছেন মিসেস বেনজীর।

পুনাকের গৌরবময় পদযাত্রা 
পুলিশের সব পর্যায়ের সদস্যদের পরিবার ও তাদের সার্বিক কল্যাণে নিশ্চিতে কাজ করার মহান ব্রত নিয়ে ১৯৮৬ সালে অরাজনৈতিক এক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্নপ্রকাশ করে বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক)। শুরু থেকেই এই সংগঠন পুলিশ পরিবারের নারী, শিশু, কিশোর, যুবক-যুবাদের কল্যাণে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করে আসছে।

পুলিশ পরিবারের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিতে পুনাক প্রাথামিক স্বাস্থ্য রক্ষা ও পরিবার পরিকল্পনার ওপর প্রশিক্ষণ প্রদান, আয়বর্ধনকল্পে উৎপাদনমুখী পেশাগত প্রশিক্ষণ প্রদান, দারিদ্র বিমোচনে সরকারের সাথে কর্মকান্ড পরিচালনা করা, প্রচলিত আইন, বিধি-বিধান অনুসরণ করে সহযোগী প্রতিষ্ঠান ও তহবিল গড়ে তোলা এবং সৌহার্দ্যমূলক সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে।

সময়ের বিবর্তনে এগিয়ে চলার চলার এই অভিযাত্রায় বিভিন্ন নেতৃত্বের হাত ধরে পুনাক দেশব্যাপী যেমন বিস্তৃত হয়েছে তেমনি যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন কার্যক্রম। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ১১ মে থেকে সভানেত্রী হিসেবে পুনাককে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল ড. বেনজির আহমেদের যোগ্য জীবনসঙ্গী জীশান মীর্জা।

পুনাক সভানেত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বেই অর্জন-সফলতা
পুনাক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুনাকের বর্তমান সভানেত্রী জীশান মীর্জা নিজের কর্মমুখর জীবনের অতলস্পর্শী হৃদয়মুখরতার গাম্ভীর্য থেকে খুঁজে এনেছেন মহিমান্বিত নান্দনিকতা। অরাজনৈতিক সংগঠনটির প্রধান হিসেবে প্রতিটি মাধুর্যমণ্ডিত কর্মযজ্ঞেই তিনি উপলব্ধি করেছেন অনিবার্য বাস্তবতাকে।

এক জ্যোতির্ময়ের পরশমণি হয়ে ধরা দিয়েছেন। নিজের পরম উপলব্ধির অমিয়ধারা ছড়িয়ে দিয়েছেন সংগঠনটির শাখায় শাখায়, নানাবিধ কর্মকান্ডের মাধ্যমেই। বিচিত্র সৃষ্টির অভিজ্ঞতা, উন্নত রুচিবোধ ও পরিণতবোধের এক নবদ্যুতির আলোকে অসাধারণ সৃজনক্ষমতায় এক নিরন্তর গতিপ্রবাহকেই সংগঠনটিতে সন্নিবেশিত করেছেন পুনাকের এই ২২ তম সভানেত্রী।

পুনাকের দায়িত্ববার গ্রহণ করে তিনি পুনাকের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে এবং প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য উদ্দেশ্য পূরণে নানাবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করেন। তার উদ্যোগে গত বছর পুনাকের কর্মী ও স্টাফদের মধ্যে ঈদের উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

এছাড়াও প্রতিমাসে একদিন করে ওইমাসে জন্মগ্রহণকারী পুনাকের সদস্য ও স্টাফদের জন্মদিন পালন করা হয়। সভানেত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করে তিনি পুনাক কারখানা ও শোরুম পরিদর্শন করেন এবং বৃক্ষরোপণ করেন।

নারীদের নিয়ে কাজ করা পুনাক নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্মদিন উদযাপনের পাশাপাশি সাইবার দুনিয়ায় ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অপরাধের বিষয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রমও পরিচালনা করেছে। এদেশের সূর্য সন্তান বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও শিশুদের জন্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন করতে আলোচনা সভার আয়োজন করে পুনাক।

এছাড়াও মহান শহীদ দিবসে জাতীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং ৭ মার্চ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সভানেত্রী জীশান মীর্জার ঐকান্তিক উদ্যোগে শিশুদের বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে জানতে এবং তাদেরকে সচেতন করার অংশ হিসাবে ‘এসো শিখি ও মনের কথা বলি’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শিশুদের পরিবেশ তথা বৃক্ষের উপকারিতা সম্পর্কে জানাতে শিশুদের মধ্যে বৃক্ষ প্রদান করেন সভানেত্রী। তার একান্ত উদ্যোগে করোনায় জীবন হারানো ব্যক্তিদের অন্তিম সৎকারে নিবেদিত যোদ্ধাদের সংবর্ধনার আয়োজন করে পুনাক।

এ বিষয়ে জীশান মীর্জা বলেন, ‘মৃতদেহ সৎকারের জন্য অতিমারি নামে আক্রান্ত কোভিডের সঙ্কটে কেউ আসলে কারও জন্য ছিলো না। এখানে যে মানুষরা ভালবেসে নিজের জীবন ও পরিবারের মায়া ত্যাগ করে মৃত ব্যক্তির সৎকারের জন্য এসেছিলো তাদের আমরা সংবর্ধনা জানিয়েছি। তাদের জন্য আমরা প্রথমবারে মতো চালু করেছি মানবতার অবদানের জন্য পুনাকের পক্ষ থেকে সার্টিফিকেট এবং সম্মাননা।

আমরা আশা করবো আমরা আমাদের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবো। আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সমাজের যারা অবদান রাখছে, পুনাকের ছোট্ট পরিসরে আমরা তাদেরকে সম্মাননা দেওয়ার চেষ্টা করবো। বিপদের এমন দিনে মানবিকতার উদাহারণ হয়ে এগিয়ে আশা ওই ব্যক্তিদের মধ্যে স্বীকৃতি সনদ ও আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করেন পুনাক সভানেত্রী।

জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী তথা জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন করে পুনাক। পুনাকের সদস্যদের মধ্যে আন্তরিক সৌহার্দ্যরে সম্পর্ক বজায় রাখতে বসন্ত বরণ, সাবেক সভানেত্রী হাবিবা জাবেদের বিদায় অনুষ্ঠান আয়োজনসহ নানান অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।

এছাড়াও সভানেত্রী হিসাবে তিনি রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) এবং রাজশাহী জেলার পুনাকের কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। সভানেত্রী হিসাবে নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসাবে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী শারদা পরিদর্শন, ডিএমপির রেইজিং ডে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ, অপারেশন সুন্দরবন সিনেমার টিজার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং আইজিপির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন।

পুনাকের যে কোন সদস্য কর্মী বা স্টাফদের বিপদে আপদে সবার আগে এগিয়ে আসেন পুনাক সভানেত্রী। তিনি ভালো সময়গুলো সাবার সাথে ভাগাভাগি করে নেন। কখনও বা শিশুদের সাথে হাসি আনন্দে মেতে উঠেন, সহকর্মীদের সাথে আনন্দঘন মুহুর্তগুলো শেয়ার করেন। সভানেত্রীর এমন সৌম্য ও হৃদয়বান মানসিকতার কারণে একটি অখন্ড পরিবার হিসেবে এগিয়ে চলছে পুনাক। এছাড়াও পবিত্র রমযান উপলক্ষে পুনাকের উদ্যোগে অসহায়,দরিদ্র,বয়স্ক মানুষের মধ্যে ইফতার বিতরণ করা হয়েছে।

পুনাকের সার্বিক কার্যক্রমে সন্তোষ আইজিপির
পুনাকের সার্বিক কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পুলিশের আইজি ড.বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার)। ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময় পুনাক যেসব বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সেটি আমি মনে করি এই সময়ের প্রয়োজনেই। এই ধরনের নতুন নতুন কর্মসূচি কার্যসূচি আপনারা নেবেন, দায়িত্ব পালন করবেন।

আমাদের অফিসারদের পক্ষ থেকে আপনাদের যে কোন কর্যক্রমে আমাদের সমর্থন থাকবে। ভালো কাজে, শুভ উদ্যোগে আপনারা আমাদের পাশে পাবেন। পুনাক সামনে এগিয়ে যাক, ভালো করুক। যেসব নতুন নতুন উদ্যোগ পুনাক গ্রহণ করছে সেসব উদ্যোগের সাফল্য কামনা করছি। আরও যে সমস্ত উদ্যোগ তাদের পরিকল্পনায় রয়েছে সেই উদ্যোগগুলো সফল হবে বলেই আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। পুলিশ সদর দফতরের পক্ষ থেকে এবং পুলিশ বাহিনীর পক্ষ থেকে পুনাককে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।’

সংবাদ কালের আলোর।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন