সাতক্ষীরার-১ আসনের (তালা-কলারোয়া) সংসদ সদস্য এড.মুস্তফা লুৎফুল্লাহর ছেলে অনীক আজিজের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি সিলিং ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
রাজধানী ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে সংসদ সদস্যদের হোস্টেল ৫ নম্বর ন্যাম ভবনের ৬০৪ নম্বর ফ্ল্যাট থেকে রোববার সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয় । তার বয়স হয়েছিল ২৬ বছর।
তার অকাল মৃত্যুর খবরে সাতক্ষীরার সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাকে শেষবারের মতো দেখতে তার বাড়িতে ভিড় করেন শত শত শুভাকাংখী।
এদিকে ঢাকায় ময়না তদন্ত শেষে অনীকের মরদেহ বিকাল সাড়ে চারটায় হেলিকপ্টারে নিয়ে আসা হয় সাতক্ষীরায়। বাদ মাগরিব সাতক্ষীরা সরকারি স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হয় তার নামাজে জানাযা। জানাযায় অংশ নেন তার বাবা এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি, জেলা প্রশাসক আবুল কাসেম মো. মহিউদ্দিন, পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমানসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ছাড়াও অগণিত শুভাকাংখী। রাতে তাকে রসুলপুরে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।
এর আগে তার দেহ তাদের পলাশপোলের বাড়িতে পৌঁছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে। সেখানে হাজার হাজার নারী পুরুষের সমাগম ঘটে। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তার মা সাতক্ষীরা এ করিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসরিন খান লিপিসহ পরিবারের সদস্যগণ। তার বাবা সংসদ সদস্য এড. মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় পলিট ব্যুরোর সদস্য ও সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সভাপতি। মা নাসরিন খান লিপি শিক্ষক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাতক্ষীরা জেলা নারীমুক্তি সংসদের সভানেত্রী।
আত্মহননকারী অনীক আজিজ ২০০৮ সালে সাতক্ষীরা পল্লীমঙ্গল স্কুল এন্ড কলেজের ভোকেশনাল বিভাগ থেকে ইলেকট্রিক্যাল ট্রেডে এসএসসি পাশ করেন। পরে তিনি খুলনা সিটি পলিটেকনিক থেকে কমপিউটার বিষয়ে ডিপ্লোমা শেষ করেন। অনীক আজিজ ‘পাঠশালা একাডেমি’-তে টেলিভিশন জার্নালিজম ও ফিল্ম বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। একই সাথে তিনি ওঊখঞঝ করার জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছিলেন। গীটার বাদক ও সংস্কৃতিমনা হাসি খুশী সুদর্শন যুবক অনীক আজিজ বেশির ভাগ সময় ঢাকায় তার সংসদ সদস্য বাবার এমপি হোস্টেলের বাসায় থাকতেন। এক সপ্তাহ আগেও তিনি সাতক্ষীরায় এসেছিলেন বাড়িতে। তার একমাত্র বোন অদিতি আদৃতা সৃষ্টি ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে লেখাপড়া অধ্যয়নরত। অনীক ছিলেন সাতক্ষীরা গণজাগরণ মঞ্চের একজন নিবেদিত কর্মী। অনীক ঠিক কি কারণে আত্মহননের পথ বেছে নিলেন তা জানা যায় নি।