সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় শিশু তুহিনকে বাবা ও চাচা মিলেই খুন করেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তুহিন হত্যার বিষয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেন সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।
মিজানুর রহমান বলেন, পুলিশের কাছে শিশু তুহিন হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন বাবা ও চাচা। হত্যার ঘটনায় সুনামগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তুহিনের চাচা নাছির উদ্দিন ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার। আদালতে হত্যার ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকার করেন তারা।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান আরও বলেন, রোববার রাত আড়াইটার দিকে বাবা আব্দুল বাছির তুহিনকে কোলে করে ঘরের বাইরে নিয়ে যান। পরে চাচা নাছির উদ্দিন ও চাচাতো ভাই শাহরিয়ার তুহিনকে খুন করেন। পরে তুহিনের কান ও লিঙ্গ কেটে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এ ঘটনা তুহিনের বাবার সহযোগিতায় হয়েছে। এ ঘটনায় তুহিনের বাবাও জড়িত। তার সামনেই শিশু তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় তুহিনের বাবাসহ থানায় নিয়ে পাঁচজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই তুহিনকে খুন করা হয় বলে পুলিশকে জানান বাবা ও চাচা।
সোমবার সন্ধ্যায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানিয়েছিলেন, শিশু তুহিন হত্যায় পরিবারের লোকজন জড়িত। তুহিন হত্যাকাণ্ডে তার পরিবারের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। তুহিনকে কেন মারা হয়েছে, কীভাবে মারা হয়েছে, কয়জনে মেরেছে পুরো ঘটনা জানা গেছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে এখন কিছু বলব না। তবে শিগগিরই আদালতের মাধ্যমে পুলিশ রেকর্ড দিয়েই আসামিদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার তাদের আদালতে নিয়ে জবানবন্দি নেয়া হয়।
এর আগে তুহিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তার বাবাসহ তিনজনকে তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বিকেলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্যামকান্ত সিনহা তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
প্রসঙ্গত, রোববার রাতে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে শিশু তুহিনকে হত্যা করে গাছের সঙ্গে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখে ঘাতকরা। সোমবার ভোরে গাছের সঙ্গে ঝুলানো অবস্থায় শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় তুহিনের পেটে দুটি ধারালো ছুরি বিদ্ধ ছিল। তার পুরো শরীর রক্তাক্ত, কান ও লিঙ্গ কর্তন অবস্থায় ছিল। তুহিন ওই গ্রামের আব্দুল বাছিরের ছেলে।