বাংলাদেশ পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের মাদক, জঙ্গি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম(বার)।
তিনি বলেছেন, অবসর নিলেও আপনি পুলিশই থাকবেন। আপনাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস ছড়িয়ে দিতে পারলে অনেকে উপকৃত হবে। অবসরকালীন সময়ে মাদক, জঙ্গি, সন্ত্রাস ও ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজারবাগে পুলিশ অডিটোরিয়াম অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতির ৩৭তম বার্ষিক সাধারণ সভায় এ কথা বলেন তিনি।
আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, এ সমিতির সদস্য মাত্র ৮৫০ জন। যা অত্যন্ত কম। পুলিশের যারা অবসরে তারা সকলে এ সমিতির সদস্য হলে ভালো হবে। সে বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া উচিত। বর্তমানে দেশে যেভাবে মাদক ছড়িয়েছে সেক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য হিসেবে আপনাদেরও দায়িত্ব রয়েছে। সকলে যার যার অবস্থান থেকে মাদক, জঙ্গি, সন্ত্রাস ও ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে কাজ করুন।
তিনি বলেন, পৃথিবীটা অনেক বড়। নতুন জেনারেশন বর্তমানে সেলফোন, ট্যাবে আটকে রয়েছে। এখান থেকে বের হয়ে বিশ্বকে দেখতে হবে। আমরা সকলে একটি পরিবার, এর মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। পুলিশে নিয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ সন্তানদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। আপনারা আমাদের অংশ, আমরাও আপনাদের অংশ। এ সময় তিনি সমিতির ফান্ডে পুলিশ সদর দফতরের পক্ষ থেকে ৫০ লাখ টাকা অনুদান দেয়ার ঘোষণা দেন।
পুলিশ প্রধান বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের ইমেজ বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি। থানা হবে মানুষের আশ্রয়স্থল। ভুক্তভোগীরা সর্বপ্রথম সাহায্যের জন্য থানায় আসেন। থানার অফিসারদের মানসিকতা, আচরণ ও ব্যবহার সর্বোত্তম হতে হবে। এজন্য দেশের প্রায় সাতশ থানার ওসিকে পুলিশ সদরে ডেকে সরাসরি কথা শুনেছি ও বলেছি। আমরা জনগণের পুলিশ হতে চাই, মানবিক পুলিশ হতে চাই। ‘মুজিববর্ষের অঙ্গীকার, পুলিশ হবে জনতার’ এ শ্লোগান ধারণ করে আমরা কাজ করছি।
সভাপতির বক্তব্যে সাবেক আইজিপি ও সমিতির সভাপতি আবদুর রউফ বলেন, গত এক বছরে আমরা এ সমিতির ২৬ সদস্যকে হারিয়েছি। আমরা সকল নিহত কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি। আমরা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারদের জন্য চিকিৎসা ফান্ড ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিতে শিক্ষাবৃত্তি ফান্ড করেছি। এক্ষেত্রে বর্তমান আইজিপিসহ কর্মরত পুলিশ অফিসাররা অনেক সহায়তা করেছেন। এজন্য তাদের প্রতি আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।
অনুষ্ঠানে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে সমিতির পাঁচ বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যকে সম্মাননা তুলে দেন আইজিপি। এছাড়া কমিউনিটি পুলিশিং এবং সমাজ সেবামূলক কার্যক্রমে বিশেষ অবদানের জন্য কর্মরত তিন পুলিশ অফিসারকে ‘এস এম আহসান স্মৃতি পুরস্কার’ দেয়া হয়।
পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন, সিনিয়র এএসপি (হাকিমপুর সার্কেল, দিনাজপুর) আখিউল ইসলাম, অফিসার ইনচার্জ (কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানা) মোহাম্মদ মামুন-অর-রশিদ ও কমিউনিটি পুলিশিং অফিসার (সিপিও) মানিকগঞ্জ সদর থানার এসআই হারেস সিকদার।
নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুর সুরক্ষায় ভিকটিম সাপোর্ট ও সমাজসেবা কার্যক্রমে বিশেষ অবদানের জন্য প্রফেসর অনামিকা হক লিলি ও ড. এম এনামুল হক অ্যাওয়ার্ড পান বগুড়ার গাবতলী সার্কেলের এএসপি সাবিনা ইয়াসমিন। এছাড়া অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পাওয়া ২৪ কৃতি শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়।