মাহফিজুল ইসলাম আককাজ : ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে হর্টিকালচার সেন্টার সাতক্ষীরা এর মূল ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগরদাঁড়ি ইউনিয়নের কাশেমপুর বেতলা বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় হর্টিকালচার সেন্টারের সিনিয়র উদ্যানতত্ত্ববিদ কৃষিবিদ মো. আমজাদ হোসেন’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন সাতক্ষীরা ০২ আসনের সংসদ সদস্য নৌ-কমান্ডো ০০০১ বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি রবি বলেন,‘বর্তমান কৃষকবান্ধব সরকার কৃষির উন্নয়নে সার্বিক সহযোগীতা দিয়ে আসছে। সাতক্ষীরা জেলায় এ সেন্টার স্থাপনের ফলে এখানকার কৃষকসহ পার্শ্ববর্তী জেলার কৃষকরাও উপকৃত হবে। ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে কৃষির উন্নয়নকল্পে জননেত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ হর্টিকালচার সেন্টার অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে গেছে এবং বিশে^র দরবারে বাংলাদেশ সম্মান লাভ করেছে। বড় বড় মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পদ্মাসেতু। বিজয়ের মাসে বঙ্গবন্ধুসহ তার শহীদ পরিবারবর্গ, জাতীয় চারনেতা এবং ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং সেই সাথে জননেত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘয়ু ও সুস্থ্যতা কামনা করছি।’
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার উইং পরিচালক কৃষিবিদ মো. কবির হোসেন, বছরব্যপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মেহেদী মাসুদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর সাতক্ষীরা জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নূরুল ইসলাম, হর্টিকালচার সেন্টার যশোর এর উপপরিচালক কৃষিবিদ বিনয় কুমার সাহা, হর্টিকালচার সেন্টার গোপালগঞ্জের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আমিনুল ইসলাম, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. রফিকুল ইসলাম, সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সদস্য ওবায়দুর রহমান লাল্টু, পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-দপ্তর সম্পাদক জিয়াউর বিন সেলিম যাদু, সদর উপজেলা উপসহকারি কৃষি অফিসার অমল ব্যানার্জী, রঘুজিৎ গুহ, কিরন্ময় সরকার প্রমুখ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হর্টিকালচার উইং পরিচালক কৃষিবিদ মো. কবির হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশে দানা ফসল উৎপাদনের ব্যাপক সাফল্য লাভ করলেও ফলের উৎপাদন, মান উন্নয়ন এবং আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণ ও সম্ভাব্য ক্ষেত্রে তা প্রয়োগে ব্যাপক উদ্যোগের প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পে ফলের উৎপাদন বৃদ্ধির বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। প্রযুক্তি সম্প্রসারণের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বসতবাড়িতে এবং বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিভিন্ন উদ্যান ফসলের উন্নয়নে আধুনিক কলাকৌশল প্রয়োগ করা হবে। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৭০ প্রকারের ফল, ৯০ প্রকারের সব্জি এবং ৩০ প্রকারের মসলাজাতীয় ফসলসহ অনেক ধরনের ফুল ও শোভাবর্ধনকারী এবং ভেষজ উদ্ভিদ চাষাবাদ হয়ে থাকে। মোট উৎপাদনের ৬০% বছরে মাত্র ৪ মাসে উৎপাদিত হয়। সারা বছর সমানুপাতিক হারে কাঙ্খিত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের ফল উৎপাদন, বিপণন, প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের প্রসার, রপ্তানী, পর্যটন, কর্মসংস্থান, পরিবেশ উন্নয়ন এবং অধিকতর পুষ্টি গ্রহনের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয় প্রভূত অগ্রগতির লক্ষ্যে এ প্রকল্পের কার্যক্রম ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’ সাতক্ষীরাতে প্রায় চার একর জমির উপর কোটি ২১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে চারতলা ভিত বিশিষ্ট তিনতলা ভবন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অর্থায়ণে নির্মাণ করা হচ্ছে। আলোচনা সভা শেষে এমপি রবি একটি বিদেশী কাজুবাদামের চারা রোপন করেন।