নির্বাহী অফিসার এবং ওসি’র প্রচেষ্টায় পিতা-পুত্রের দীর্ঘদিনের বিরোধিতা নিষ্পত্তি

দ্বারা zime
০ মন্তব্য 340 দর্শন

 

পিতা পুত্রের জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধীতার নিষ্পত্তির প্রচেষ্টায় প্রাথমিকভাবে সফল হয়েছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিঞ্জ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী।সোমবার দুপুর ৩ টার দিকে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে পিতা ও পুত্রের মধ্যকার বিরোধ প্রাথমিক ভাবে নিষ্পত্তি করেন ইউএনও দেবাশীষ চৌধুরী।সূত্র জানায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পরানদহ গ্রামের হাজী মোতালেব সরদার তার বড় পুত্র জিয়াউল হক কে ৩ বিঘা জমি হেবানামা করে দেন।পরে ছেলের বৌ এর সাথে শ্বশুর-শ্বাশুরীর দন্দের এক পর্যায়ে পিতা মোতালেব তার হেবানামা করা জমি ফিরিয়ে নেবেন বলে সাতক্ষীরার সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতে মামলা করে দেন।এক পর্যায়ে বিজ্ঞ আদালত হেবানামা করা জমিতে ইনজেংশান জারি করে আদেশ দেন ঐ জমিতে ছেলে কোন ফসল চাষ করতে পারবেনা। কিন্তু বিঞ্জ আদালতের আদেশ অমান্য করে ছেলে ঐ হেবানামা করা জমিতে গিয়ে পিতার ফসল কেটে নেন,ঘেরের মাছ ধরে নেন। এতে পিতা বাধা দিলে পিতা মোতালেব কে তার ছেলে দা দিয়ে কোপ মারতে উদ্দত্য হয়।পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পিতা এ যাত্রায় বেঁচে যান।পরের দিন পিতা হাজী মোতালেব সাতক্ষীরা সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী ও সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বরাবর একটি অভিযোগ দাখিল করেন।অভিযোগ পাওয়া মাত্রই উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে বেপরোয়া ছেলে কে আটক করতে সাতক্ষীরা থানার এএসআই নুরনবী ও কনস্টেবল একরামুজ্জামান কে পাঠান ওসি।

গতকাল রাত ১০ টার দিকে এএসআই নুরনবী ও সঙ্গীয় ফোর্স অসহায় পিতার সেই বেপরোয়া ছেলে জিয়াউল কে হরিষপুর থেকে আটক করে সাতক্ষীরা থানায় নিয়ে আসেন।থানায় এসে ছেলের নামে মামলা করতে চাইলে ওসি মোস্তাফিজুর রহমান পিতা মোতালেব কে ধৈয্য ধারন করতে পরামর্শ দেন।যেতেতু জমিজমা সংক্রান্ত বিষয় এবং বিজ্ঞ আদালতে মামলা চলছে সেহেতু অফিসার ইনচার্জ বুদ্ধি করে বেপরোয়া পুত্র জিয়াউল হক কে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে হাজির করেন।

এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী পিতা মোতালেব হাজী ও পুত্র জিয়াউল হককে মুখোমুখি করে দুজনের কথা ধৈয্য ধরে শোনেন।ঘন্টার পর ঘন্টা সময় দিয়ে ইউএনও বিষয়টি নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পারতপক্ষে পিতা-পুত্র কেউ কাউকে একবিন্দু পরিমান ও ছাড় দিতে রাজি নন।অপর দিকে নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী ও বিষয়টি নিষ্পত্তি না করা পর্যন্ত পুত্র জিয়াউল হক কে ছাড়বেন না।একপর্যায়ে ইউএনও দেবাশীষ চৌধুরী ঐ হেবানামা করা জমির কাগজপত্র ও বিঞ্জ আদালতের ইনজেংশন জারির সকল কাগজ পত্র দেখে বেপরোয়া পুত্র জিয়াউল হক কে বলেন,যেহেতু জমিতে বিঞ্জ আদালত ইনজেংশন জারি করেছেন, সেহেতু মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত তুমি ঐ হেবা করা জমিতে যেতে পারবেনা এবং পিতা-মাতার সাথে বেয়াদবি করতে পারবেনা,পিতা-মাতার গায়ে হাত তুল্লে তোমাকে কঠোর শাস্তি পেতে হবে।এসময় পুত্র জিয়াউল হক নির্বাহী অফিসারের কথা মেনে নেন এবং ৩৫০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্টাম্পে চুক্তি মেনে নিয়ে স্বাক্ষর করেন। অপরদিকে নির্বাহী অফিসারের কথা মেনে নিয়ে পিতা হাজী মোতালেব ও চুক্তিবদ্ধ স্টাম্পে স্বাক্ষর করেন।

এসময় পিতা আর পুত্র কে বুকে বুক লাগিয়ে কোলাকুলি করিয়ে দেন নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী।একই সময়ে ছেলের বৌ ও তার শ্বাশুরীর সাথে সম্পর্কের উন্নয়ন করে দেন ইউএনও।এসময় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।আর সেই দৃশ্যটি কামেরা বন্দি করে তাদের সেই অনুভুতির স্পর্শ নিতে ফ্রেমে আবদ্ধ হন সদর উপজেলার বিঞ্জ এক্সিকিউটিভ ম্যাাজিস্ট্রেট দেবাশীষ চৌধুরী ও তাঁর মোবাইল কোর্ট বেঞ্চের সহকারী বৃন্দ।এসময় সাতক্ষীরা থানার সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর নুরনবী,কনস্টেবল এমদাত সহ নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ের বিভিন্ন পদমর্যাদার স্টর্ফবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন