পুলিশের উপস্থিতি সর্বত্র, সামনের সারিতে থেকে তারা দায়িত্ব পালন করছে- ঢাবি ভিসি

দ্বারা zime
০ মন্তব্য 178 দর্শন

 

পুলিশের উপস্থিতি নেই জীবনের ও সমাজের এমন কোনো ক্ষেত্র নেই। পুলিশের প্রয়োজন সর্বত্র আছে। অগ্রণী হিসেবে তারা দায়িত্ব পালন করছে বলে উল্লেখ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, শান্তি, কঠিন সংকটে, দুর্ধর্ষ দূর্ঘটনার সময় পুলিশ সামনের সারিতে থেকে আমাদের জন্য কাজ করছে। সে কারণে তাদেরকে উৎসাহ দেওয়া ও ভালো কাজকে সামনে আনা আমাদের মানবিক ও নৈতিক দায়িত্ব।

শনিবার (৩১ অক্টোবর ২০২০) সকাল ১১টায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স অডিটোরিয়ামে ‘কমিউনিটি পুলিশিং ডে’ ২০২০ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেছেন। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম-বার।

মুজিববর্ষের মূলমন্ত্র, কমিউনিটি পুলিশিং সর্বত্র এই প্রতিপাদ্যের প্রশংসা করে উপাচার্য জানান, পুলিশের দৃষ্টিভঙ্গি ও দর্শনে পরিবর্তন এসেছে। আমি উপাচার্য হিসেবে এখানে এসেছি, আমি এই কমিউনিটির একজন সদস্য। পুলিশের সর্বত্র যে সহযোগিতা আমরা পাচ্ছি তা এই কমিউনিটি পুলিশিং সুবিধার অংশ হিসেবে আমরা ভোগ করছি। পুলিশ ও কমিউনিটির সদস্যগণ আমাদের সমাজকে সুশৃংখল রাখার জন্য নানাবিধ অপরাধ হ্রাস করতে কাজ করছে। বর্তমানে ইউনিভার্সিটির গ্রাজুয়েটরা পুলিশে আসতে আগ্রহী হচ্ছে, তাদের মধ্যে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এসেছে, মানুষের আস্থার জায়গা বেড়ে গেছে। ব্যক্তি পর্যায়ে কখনও কখনও অনাকাঙ্গিত ঘটনার ফলে দেশ, সমাজ ও পুলিশ কমিউনিটির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়। পুলিশের হাজার হাজার ভালো কাজের উদাহরণ আছে তারা সমাজের যেকোন অপরাধ প্রতিরোধে ও অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসছে।

কমিউনিটির মধ্যে সংঘটিত অপরাধ জাতীয় পত্র-পত্রিকায় আসার গুরুত্ব আছে। সেখান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সেগুলো এড়াতে পুলিশ কার্যকর ব্যবস্থা ও প্রশাসনিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে। একইসাথে আমাদের দায়িত্ব হবে পুলিশের যে ভালো কাজগুলোর জন্য সমাজ, দেশ ও কমিউনিটি উপকৃত হচ্ছে সে কাজগুলো সামনে তুলে আনা এবং এটা খুবই জরুরী। এই দুইটি বিষয় সমানভাবে গুরুত্ব দিলে এই কমিউনিটির সাথে সম্পৃক্ত মানুষগুলো অধিক মাত্রায় কাজে আগ্রহী হয়ে উঠবে।

সভাপতির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সর্বত্র যাতে কমিউনিটি পুলিশিং ছড়িয়ে পড়ে সে উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের এবারে প্রতিপাদ্য বিষয় ‘‘মুজিববর্ষের মূলমন্ত্র কমিউনিটি পুলিশিং সর্বত্র’’। অপরাধ প্রতিরোধ বা তথ্য উদঘাটনে পুলিশের ক্ষমতা মূখ্য বিষয় না, মূখ্য বিষয়টা হলো যে সমাজের জন্য, যে মানুষের জন্য আমি কাজ করছি, তারা যদি আমার সাথে না থাকে তাহলে এই পুলিশিং কখনোই মানুষের সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবে না। পুলিশের সাথে সম্পর্ক তৈরির জায়গা হচ্ছে এই কমিউনিটি পুলিশিং। আপনারা দেখেছেন করোনা মহামারী শুরুর পর থেকে বাংলাদেশে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট কিভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। যেখানে সন্তান মাকে ফেলে রেখে গেছে, সেখানে পুলিশ কাউকে ফেলে রেখে যায়নি। আমরা ফেলে রাখা মায়ের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি, যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদেরও কবরস্থ করার ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। ঢাকা শহরের কোথাও করোনায় আক্রান্ত মানুষ কবরস্থ করতে দিচ্ছিলেন না স্থানীয়রা। কমিউনিটি পুলিশিং এর মাধ্যমে স্থানীয়দের বোঝাতে সক্ষম হয়েছি, কবর থেকে এই জীবাণু মানুষকে আক্রান্ত করতে পারেনা।

করোনাকালে আমরা আপনাদের ছেড়ে যাইনি উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, যেকোন প্রয়োজনে আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আমরা ঢাকা শহরে ২ মাস প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষকে ১ বেলা করে রান্না করা খাবার খাইয়েছি। প্রচুর মানুষকে হাজার হাজার প্যাকেটে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী দিয়েছি। খাবারের প্রয়োজনে যিনি আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন তার বাসায় খাবার পৌঁছে দিয়েছি। আমরা চাই আপনারা যেন ভয় না পান। স্বাধীন দেশের নাগরিক আপনি, আপনাদের সেবা করবো বলে, আপনাদের অসুবিধায় পাশে দাঁড়াবো বলে এই পুলিশের চাকরিতে যোগ দিয়েছি। এখন আপনি যদি আমাকে ভয় পান, ঘৃণা করেন, আপনার অন্তর থেকে আমাকে দূরে সরিয়ে দেন তাহলে আপনি বিপদে পড়লে কার কাছে যাবেন। পুলিশ যাতে জবাবদিহিতামূলক পুলিশ হয় সেটার জন্য আমাদের যার যেখানে থেকে যতটুকু ভূমিকা রাখার প্রয়োজন, ততটুকু ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছি। পুলিশের যারা দুস্কর্ম করছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। এই দেশটা এমনি এমনি স্বাধীন হয়নি। অনেক রক্ত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত দেশটি কতিপয় দুর্বৃত্তের কাছে ছেড়ে দিবো এমন প্রত্যাশা করা ঠিক না। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করলে একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণ করতে পারবো। পুলিশের সমস্ত ভাল কাজে আমরা আপনাদের পাশে চাই এবং পুলিশের খারাপ কাজে সবার আগে প্রতিবাদী কন্ঠটা আপনারই হোক এমন প্রত্যাশা করি।

এর আগে কমিউনিটি পুলিশিং এ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় রমনা বিভাগ হতে কমিউনিটি পুলিশিং এর সদস্য এ্যাডভোকেট নাজমুল হাসান ও মতিঝিল বিভাগ হতে মোঃ মারুফ আহমেদ মোনছের এবং কমিউনিটি পুলিশিং এ শ্রেষ্ঠ পুলিশ অফিসার হিসেবে রামপুরার থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন্স) ইউসুফ হাসান ও নিউমার্কেট থানার এসআই মোঃ শাহেব আলীকে পুরস্কৃত করা হয়।

এ সময় ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণসহ রমনা ও মতিঝিল বিভাগের কমিউনিটি পুলিশিং নেতৃবৃন্দ এবং গণমাধ্যমের সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন