করোনার অন্ধকার কাটতে সাতক্ষীরায় যারা আলো দিয়ে যাচ্ছেন

দ্বারা zime
০ মন্তব্য 697 দর্শন

 

সিটিজেন জার্নালিস্ট,সাতক্ষীরা:   পুরো দেশ জুড়ে এখন করোনা আতংকে অন্ধকার। চলছে লক ডাউন।লক লাউন ঘোষনা থাকলেও মানছেনা অনেকেই।বিভিন্ন অযুহাতে মানুষ বাহিরে বের হচ্ছে।যদি সারা দেশের তুলনায় সাতক্ষীরা জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা খুবই কম।ইতি মধ্যে সাতক্ষীরার সর্ব প্রথম করোনা আক্রান্ত স্বাস্থ্য কর্মী মাহামুদুর রহমান সুমন সুস্থ হয়ে গেছেন।কয়েকদিন আগে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল, সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম বার ও সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডাঃ হুসাইন সাফায়াত করোনা জয়ী সুমন কে তার বাড়ি গিয়ে ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়ে অভিনন্দন জানান।এতে সাতক্ষীরার মানুষের মনোবল আরো দৃঢ় হয়েছে এবং করোনার অন্ধকার কাটতে শুরু হয়েছে।আর করোনার অন্ধকার থেকে সাতক্ষীরা জেলা কে আলোকিত করতে নিরালস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল ও সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার)।

খোজ নিয়ে জানা যায়,সাতক্ষীরা জেলার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল ও সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) এঁর নিরালস প্রচেষ্টায় সাতক্ষীরা জেলায় করোনা ভাইরাস অন্যান্য জেলার মত বিস্তার ঘটাতে পারিনি। সাতক্ষীরায় এ পর্যন্ত মাত্র ৪-৫ জনের করোনা পজেটিভ এসেছে কিন্তু সেগুলো নারায়ণগঞ্জ বা ঢাকায় কাজ করতে যাওয়া মানুষরা সাতক্ষীরায় এসে সনাক্ত হয়েছেন।তবে আক্রান্তদের বাড়ি সহ তাদের আসেপাশের এলাকা লক ডাউন করা হয়েছে এবং লড ডাউন করা বাড়ি গুলো পুলিশের নজরদারি তে রয়েছে।

মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশনায় গত সপ্তায়ে সারা দেশের ন্যায় সাতক্ষীরায় ও ঈদের কাপড়ের মার্কেট খুলে দেওয়া হয়।কিন্তু মানুষ কোন রকম নিয়ম নীতি না মেনে সামাজিক দুরত্ব না মেনে মার্কেট গুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখে সাতক্ষীরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভা করে সিদ্ধান্ত নেন যে সাতক্ষীরার সকল কাপড়ের দোকান বন্ধ থাকবে।নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান বিকাল ৪ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে তবে ঔষধের দোকান খোলা থাকবে।
করোনা প্রতিরোধ কমিটিতে সংসদ সদস্য বৃন্দ, সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার),সিভিল সার্জন ডাঃ হুসাইন শাফায়াত,জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্জ নজরুল ইসলাম,মেয়র,উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু সহ সকল নির্বাহী অফিসার বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় এক জেলা থেকে অন্য জেলায় আসার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় এবং এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় প্রবেশের মুখে লক ডাউন চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়।

করোনা প্রতিরোধ কমিটির এমন সিদ্ধান্তের পর থেকে এখন থেকে হার্ড লাইনে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ।
একদিকে যেমন জেলা প্রশাসকের নির্দেশে জেলার সাতটি উপজেলার নির্বাহী গণ করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ থেকে শুরু করে করোনা প্রতিরোধে যা যা করনীয় তাই করে যাচ্ছেন।

অপরদিকে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) এঁর নির্দেশনা মোতাবেক সাতক্ষীরা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রশাসন ও পদন্নোতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইলতুৎ মিশ এঁর তত্বাবধানে সাতক্ষীরা জেলার সদর সার্কেলর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মির্জা সালাহ্উদ্দিন,কালিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামিরুল ইসলাম,হেড কোয়াটার সার্কেল জিয়াউর রহমান,তালা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির ও দেবহাটা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ইয়াছিন আলীর নেতৃত্ব সংশ্লিষ্ট এলাকার অফিসার ইনচার্জ গণ করোয়ায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ থেকে শুরু করে লক ডাউন চেকপোস্টেে তল্লাশি,করোনায় আক্রান্ত দের বাড়ি লাল পতাকা টানিয়ে লক ডাউন ঘোষনা,স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ থেকে শুরু করে করোয়া উপসর্গে মারা গেলে তাদের জানাযা ও দাফন কার্য সম্পাদন করছে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ।

খোজ নিয়ে জানা যায় সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের নিজস্ব অর্থায়নে এ পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার অসহায় ও দুস্থ মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রত্যেক পরিবার কে ১০ কেজি চাল,৫ কেজি আলু,২ কেজি পিয়াজ,১ লিটার তেল,২ কেজি ডাল ও ১টি ডেটল সাবান পৌছে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জের মাধ্যে।অপরদিকে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ তেলবাহী ট্রাকের মাধ্যমে জেলা শহরের এক প্রান্ত অপর প্রান্ত পর্যন্ত জীবাণু নাশক ঔষধ ছিটিয়ে সাতক্ষীরা শহরের রাস্তা-ঘাট জীবানু মুক্ত করার চেষ্টা অব্যহত রেখেছে।

একই ভাবে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল যারা চাইতে লজ্জা পান এমন ব্যক্তির এসএমএস পেয়ে ৬ টি মটরসাইকের যোগে প্রায় ৫ হাজার মধ্যবিত্ত পরিবারের ঘরে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ত্রাণ পৌছে দিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের সুত্র জানায় মাননীয় প্রধান মন্ত্রী সাতক্ষীরা জেলায় ৫৫ হাজার খাদ্য সহায়তা কার্ড দিয়েছেন। সেগুলো জেলা প্রশাসক জেলার সাতটি উপজেলার নির্বাহী অফিসার দের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছেন। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ৯৫০০ টি খাদ্য সহায়তা কার্ড দেওয়া হয়েছে নির্বাহী অফিসারের দপ্তরের।এবিষয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেবাশীষ চৌধুরী জানান প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সহায়তা কার্ড বিতরণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন শতভাগ সচ্ছতা নিয়ে প্রকৃত অভাবী মানুষদের মাঝে এ খাদ্য সহায়তা কার্ড বিতরণ করা হবে।

ত্রাণ বিতরণ,লক ডাউন চেকপোস্ট পরিদর্শন,বাজার মনিটরিং করার সাথে সাথে সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল প্রতিদিন তার অফিসিয়াল ফেইজবুক লাইফের মাধ্যে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সাতক্ষীরা বাসীর উদ্যেশ্যে ব্রিফিং প্রদান করে যাচ্ছে।

অপর দিকে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার) করোনা পরিস্থিতির আপডেট নিয়ে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের ফেইজবুক লাইভে এসে প্রতিনিয়ত ব্রিফিং প্রদান করছেন।ফেইজবুক লাইভে এসে পুলিশ সুপার বিভিন্ন মানুষের সমস্যার কথা শোনেন ও সেগুলো তাৎক্ষণিক সমাধান করে দেন।সম্প্রতি সাতক্ষীরায় ধান কাটা শ্রমিক বহন করা হয় এমন সাইট বোর্ড টানিয়ে একটি পরিবহন টাকা থেকে শ্যামনগরে ১৬০০ টাকা জন প্রতি ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের আনা-নেওয়া করছেন, এমন অভিযোগ পেয়ে গতকাল সাতক্ষীরা ট্রাফিক পুলিশ সেই পরিবহণ টি আটক করে এবং পরিবহনের ড্রাইভার সহ সংশ্লিষ্ট দের নামে মামলা করা হবে বলে হুশিয়ারি প্রদান করেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার)।শুধু তাই নয় বর্ষাকাঁদা উপেক্ষা করে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার তালার সুভাষিণী লক ডাউন চেকপোস্টে আকষ্মিক পরিদর্শনে যান।পরিদর্শনে দিয়ে দেখতে পান যশোর থেকে পিক-আপ যোগে লোকজন সাতক্ষীরায় প্রবেশের চেষ্টা করছে।এসময় পুলিশ সুপার সেই পিকআপ ভর্ত্তি মানুষ গুলো কে ঝাউডাঙ্গার একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চৌদ্দ দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করে দেন।পুলিশ সুপার তার অফিসিয়াল ফেইজবুকে ঘোষনা দিয়েছেন জেলার বাহিরে থেকে কেউ সাতক্ষীরা আসলে তাদের কে মশারী ছাড়া স্কুলের বেঞ্চে ঘুমাতে হবে ১৪ দিন। পুলিশ সুপারের এমন ঘোষনায় আজ ২-৩ দিন জেলায় বাহিরের জেলা থেকে কোন রকম যানবাহন প্রবেশ করতে পারছেনা।জেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পাসাপাসি সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ করেনা মোকাবেলায় যে বলিষ্ঠ অবদান রেখে চলেছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। ইতি মধ্যে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিদের হাসপাতালে পৌছানোর জন্য সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ কুইক রেসপন্স টিম গঠন করেছে। ১৬ সদস্যের এ টিম দুটি এ্যাম্বুলেন্স ও মেডিকেল সরঞ্জাম নিয়ে সব সময় প্রস্তিত। কোন ব্যক্তি করোনায় মারা গেলে ঐ আক্রান্ত ব্যক্তির গোসল করানো থেকে শুরু করে ঐ ব্যক্তির জানাযা ও দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের কুইক রেসপন্স টিম সম্পুর্ন ভাবে প্রস্তুত এখন।

অপরদিকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল উপজেলায় প্রবেশ দ্বারে স্বেচ্ছাসেবী টিম গঠন করেছেন।তারা বাহিরের উপজেলা খেকে কেউ প্রবেশ করছে কিনা তা কঠোর ভাবে মনিটরিং করছে। এদিকে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বিকাল ৪ টার পর শহরের কাপড়ের দোকান ও জুতার দোকান খোলা থাকলে সেসব দোকানে ভ্রাম্যমাণ মোবাইল কোর্ট বসিয়ে দোকান মালিকদের জরিমানা প্রদান করছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গণ। সব মিলেই বলা যায় সাতক্ষীরায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও করোনার অন্ধকার গ্রাস থেকে সাতক্ষীরা জেলা কে মুক্ত করতে নিরালস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল ও সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম (বার)।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন