এক অনন্য, অসাধারণ পুলিশ সুপার চুয়াডাঙ্গার এসপি জাহিদুল ইসলাম

দ্বারা Update Satkhira
০ মন্তব্য 974 দর্শন

 

মানবিকতা ও নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় এক অন্যন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মো:  জাহিদুল ইসলাম। তিনি চুয়াডাঙ্গার আপামর জনসাধারণের হৃদয়ে ইতিমধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন, পরিণত হয়েছেন ভালোবাসার পাত্রে। তার হাতের জাদুর পরশে বদলে বদলে গেছে চুয়াডাঙ্গা জেলার পুলিশ। চুয়াডাঙ্গা জেলায় তার সেবা দানের দুই বছর উপলক্ষ্যে মানবিক পুলিশিং এর গল্প ও জেলায় তার অবদান বিশ্লেষণ করেছেন জনতার ইশতেহার প্রতিবেদক।

#  উইমেনস সাপোর্ট সেন্টার- পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গায় এসে দেখেন বিবাহ বিচ্ছেদে চুয়াডাঙ্গার নাম শীর্ষে। নারীদের জন্য শত আইন থাকলেও সেগুলোর মাধ্যমে বিচার পেতে দীর্ঘ সময়, অর্থ খরচ ও বিভিন্ন কারণে বিচার পেতে বিলম্ব হত। ছোট ছোট সমাস্যা সমাধানে মধ্যস্ততাকারীর অভাবে ডিভোর্সে রুপ নিত। এতে সন্তান হারাত বাবা-মায়ের ভালোবাসা। এই সমাস্যাগুলো সমধানে পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম গড়ে তুললেন উইমেনস সাপোর্ট সেন্টার। আজ অবধি ৩৬৪ টি পরিবার এই সেবা গ্রহণের জন্য উইমেনস সাপোর্ট সেন্টারে আসেন।

#  বাল্য বিবাহ রোধ- উইমেন্স সাপোর্ট সেন্টার খুলে বুঝতে পারেন বিবাহ বিচ্ছেদ ও সংসারে অশান্তির অন্যতম কারণ অল্প বয়সে মেয়েদের বিবাহ। তারা অল্প বয়সে সবার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না। তাছাড়া এটা আইনের পরিপন্থী কাজ। তাই জেলার সমস্ত কাজীদের সাথে মিটিং করলেন। তাদেরকে কঠোর হুশিয়ারির সাথে ভালোভাবে বোঝালেন। কাজিরা অভিযোগ করেন- ইউনিয়ন তথ্য সেবা থেকে বয়স বাড়িয়ে মানুষ বিয়ে দেয়- তখন তিনি ইউনিয়ন তথ্যসেবায় কাজ করা উদ্দোক্তাদের সাথেও বসার সিদ্ধান্ত নিলেও করোনা কারণে সম্ভব হয়ে উঠেনি।

#  ভাঙ্গা সংসার জোড়া- জেলায় এপর্যন্ত ২৫৮ টি ভাঙ্গা সংসার জোড়া দিয়ে এক অন্যান্য পুলিশিং সেবার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন পুলিশ সুপার মি. জাহিদ। আরও ৬৪ টি পরিবারকে আইনী সহয়তা দিয়েছেন।

#  কন্যা সন্তান হলেই পুরুস্কার- সমাজে মেয়েকে ছোট মনে করা হয়। মেয়ে মানেই তাকে বিয়ে দিয়ে বিদায় করতে হবে এমন একটি অবস্থা বিরাজ করছে। জেলাব্যাপী কারো ঘরে কন্যা সন্তান জন্ম নিলেই উপহার পাঠিয়ে শুধু জেলা নয় সারা দেশে প্রশংসিত হন জাহিদ। চুয়াডাঙ্গা জেলায় জন্ম নেওয়া ৭৭৮ টি কন্যা শিশুর পরিবার পুলিশ সুপারের দেওয়া পুরুস্কার পেয়েছেন।

#  মাদকের বিরুদ্ধে ৫ বাহিনীর যৌথ অভিযান- পুলিশ, র্যা ব, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে যৌথ বাহিনী গঠন করে মাদকের আতুরঘর দর্শনা সহ জেলাব্যাপী অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।

#  করোনাকালীন খাদ্য সহযোগিতা- করোনার মহামারির সময় লকডাউন চারদিকে কর্মহীন মানুষ। ঘরে ভাত নেই, চিকিৎসার টাকা নেই।
চারদিকে হাহাকার। তখন কিছু নেতাকর্মী বাদে অধিকাংশ নেতাকর্মীকে জনগণ খুঁজে পাচ্ছিল না। ঠিক তখনি সাধারণ মানুষের পাশে ছুটে এসে দাড়ালেন পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম। খাদ্য সহয়তার জন্য হটলাইন নম্বর চালু করলেন। ক্যাম্পে ক্যাম্পে তালিকা ও খাবার চাহিদা চেয়ে পাঠিয়েছেন। শুধু খাদ্য সহয়তা ই নয় বাচ্ছার দুধ, ওষুধ ফোন দিলেই পৌঁছে দিয়েছেন। তিনি ১০ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্য বিতরণ করেন। প্রায় ২৫০ জনকে ওষুধ কিনে দিয়েছেন। তাছাড়া ২৫০ জনকে বস্ত্র দিয়ে সহয়তা করেছেন।

# করোণা প্রতিরোধে ভূমিকা- করোনার সময় তার ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মত- হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক, লিফলেট বিতরণ করেছেন মুক্ত হস্তে। এসব বিতরণ করতে করতে হাতে টাকা শর্ট পড়লে চুয়াডাঙ্গার এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ধার নিয়ে চুয়াডাঙ্গার মানুষের সেবা করেছেন। ৭০ হাজার মাস্ক বিতরণ, ২৫ হাজার লিফলেট বিতরণ করেছেন। পাশাপাশি জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জনগনকে সচেতন করতে মাইকিং করেছেন।

#  অক্সিজেন সংকটে জেলাবাসীর পাশে- করোনা রোগীদের ব্যাপক অক্সিজেন সংকট দেখা যায়। হাসপাতালে আইসিইউ নেই, অক্সিজেন নেই- অক্সিজেন অভাবে জনগণ যখন আতঙ্কে সেই সময় বিভিন্ন রাজনীতিবিদ, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পাশাপাশি পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গাবাসীর পাশে দাঁড়ান। তিনি সদরে ১০ টি বড় অক্সিজেন সিলিন্ডার, ২ টি দামুড়হুদায় এবং ২ টি আলমডাংগায় প্রদান করেন।

#  পুলিশ ক্লিয়ারেন্স-ওয়ান স্টপ সার্ভিস- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর অতীত খুব ই খারাপ, ৪/৫ হাজারের নিচে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স হত না। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স করতে গিয়ে জনগণ থানায় তদবির, আবার এস বি অফিসে তদবির, থানা থেকে কাগজ দ্রুত ডি এস বি অফিসে পাঠাতে অর্থ লেনদেন হওয়ার কথা শুনে এবং জনগণের হয়রানি কমাতে থানায় যাওয়া বন্ধ করে দিলেন। এস পি অফিসে চালু করলেন ওয়ান স্টপ সার্ভিস। তিনি বললেন- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স করতে কোথাও যাওয়ার দরকার নাই। এস পি অফিসে এসে আবেদন করুণ অথবা যেকোন কম্পিউটারের দোকান থেকে আবেদন করলেই পেয়ে যাবেন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট। পুলিশ আপনার বাড়ি গিয়ে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র গিয়ে নিয়ে আসবে।

#  প্রতিবন্ধীদের পাশে পুলিশ সুপার- জেলার প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর পাশেও মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম। এক প্রতিবন্ধীর মেয়ের বিয়েতে অর্থ দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই হুইল চেয়ার ও আর্থিক সাহায্য চেয়ে আবেদন করলে বা ফোন করলে পুলিশ সুপার সাহায্যর হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আজ অবধি ৬ টি হুইলচেয়ার দিয়েছেন এবং এক প্রতিবন্ধীকে ব্যবসা করতে কিছু মূলধন দেন।

# ছাত্রছাত্রীদের পাশে পুলিশ সুপার- জেলায় এসেই স্কুলিং পুলিশ চালুর উদ্যোগ নেন পুলিশ সুপার। চুয়াডাঙ্গা জেলার সমস্ত জি পি এ ফাইভ ও এ গ্রেড প্রাপ্তদের উৎসাহ দিতে সংবর্ধনার আয়োজন করেন। ৭৭৮ জন ছাত্রছাত্রীকে ফুল, ক্রেস্ট, বই, চারাগাছ দিয়ে সংবর্ধনা জানান। ছাত্রছাত্রীদের মাঝে নিজ ফান্ড থেকে ১০০০+ অসমাপ্ত আত্মজীবনী বই বিতরণ করেন। গরীব ছাত্রছাত্রীদের বই-খাতা উপহার দেন।

# গতবৎসর বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি ড.বেনজীর আহমেদ বিপিএম-বার এঁর দিক নির্দেশনা মোতাবেক চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপার মো: জাহিদুল ইসলাম  কনস্টেবল নিয়োগে মাত্র ১ শ টাকা সরকারী খরচে চুয়াডাঙ্গা র অসহায় ও গরীব পরীবারের মেধাবী সন্তানদের কে পুলিশে চাকুরি দিয়েছিলেন।যেটা তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন টেলিভিশন ও জাতীয় পত্রিকায় প্রশংসা আকারে প্রকাশিত হয়েছিল।

#  জনগণের দোরগোড়ায় এস পির সেবা- পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গায় এসেই তার মোবাইল নাম্বার হটলাইন নাম্বার হিসাবে লিফলেট করে জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেয়। জেলার প্রত্যক এলাকায় তার লোকজন তৈরী হয়ে যায়। এতে করে খুব সহজেই জনগণ পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলতে পারেন ও তাদের সমস্যা গুলো মন খুলে বলতে পারেন।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন