নৈকাটি দাখিল মাদ্রাসায় নিরাপত্তা প্রহরী ও আয়া নিয়োগে দুর্নীতি, অনিয়ম ও বড় অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

দ্বারা zime
০ মন্তব্য 295 দর্শন

 

স্টার্ফ রিপোর্টার:  আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের নৈকাটি দাখিল মাদ্রাসায় নব্য সৃষ্ট পদে নিরাপত্তা প্রহরী ও আয়া পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় গত ৫ অক্টোবর। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কয়েক মাস পূর্ব থেকে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম ও সুপার মাওঃ শেখ এমদাদুল হকের সাথে দামাদামি চলতে থাকে আগ্রহী প্রার্থীগণের। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিন পর্যন্ত সাড়ে ১০ লাখ চুক্তিতে শীর্ষে অবস্থান করছিলো অত্র মাদ্রাসার শিক্ষক নৈকাটি গ্ৰামের শহিদুল ইসলামের ছেলে সবুজ হোসেন ও একই গ্ৰামের শফিকুল ইসলাম মোড়লের পালিত কন্যা সোনিয়া খাতুন। বর্তমানে আয়া পদে সোনিয়াকে টপকে ১৫লক্ষ টাকা চুক্তিতে শীর্ষে অবস্থান করছেন একই গ্ৰামের ইছহাক গাজীর কন্যা শিরিনা খাতুন। বর্তমানে নিরাপত্তা প্রহরী পদে সবুজ হোসেন সাড়ে ১০ থেকে বেড়ে ১৫ লাখে শীর্ষে অবস্থান করছে।

আয়া পদে চাকরি পেতে বহু দিন থেকে সভাপতি এবং সুপারের সাথে চুক্তিতে থাকা সোনিয়ার পিতা শফিকুল ইসলাম মোড়ল প্রতিবেদককে জানান, সভাপতি এবং সুপারের সাথে আমার মেয়ের জন্য সাড়ে ১০ লাখে কথা পাকাপাকি ছিলো কিন্তু বুধবার আমাকে জানানো হলো ১৫ লাখে আমরা প্রার্থী পেয়ে গেছি। শফিকুল ইসলাম মোড়ল কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার কোনো সন্তান নেই। শেষ সম্বল টুকু বিক্রি করে পালিত মেয়েটার ভবিষ্যতের কথা ভেবেছিলাম। এখন দেখছি আমার সব দিক গেল। মেয়েটার চাকরী তো হচ্ছে না অন্য দিকে জমি লিখে না দিলে বেঈমানি করা হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে মাদ্রাসা বন্ধ দেখা গেছে। প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত কাউকে সেখানে পাওয়া যায়নি। সাংবাদিককের উপস্থিতি টের পেয়ে একে একে এলাকাবাসি জড়ো হয়ে সুপার এবং ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে ভবন নির্মাণে দূর্নীতি, বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত লোহার পাতের চালের ফ্রেম বিক্রিতে দূর্নীতি, নিরাপত্তা প্রহরী ও আয়া নিয়োগে বড় অংকের অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা, সুপার নিয়মিত অফিসে না এসে অফিস সহকারীকে দিয়ে নকল সিগনেচার করিয়ে দৈনন্দিন অফিসের কাজ পরিচালনাসহ নানাবিধ দুর্নীতির কথা বলতে থাকেন।

জানাগেছে, শিক্ষক শহিদুল ইসলাম তার ছেলে সবুজের নিয়গের জন্য অলরেডি ৯লক্ষ টাকা সভাপতি ও সুপারের কাছে দিয়ে দিয়েছেন। বাকি টাকা ম্যানেজের জন্য রুপালী ব্যাংক বুধহাটা শাখা থেকে ৬ লক্ষ টাকা লোন নিচ্ছেন।

শিরিনা তার চুক্তির ১৫ লক্ষ টাকা ম্যানেজের জন্য স্বামী এবং তার নামীয় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধুলিহরস্থ বাড়িসহ জমি বিক্রি করে দিয়েছেন। রেজিস্ট্রি হবে নিয়োগের পরে।

সবুজ হোসেন, শিরিনা এবং তাদের অভিভাবকের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে তারা সাংবাদিকের সাথে নিয়োগ কেন্দ্রিক কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নিয়োগ প্রার্থী প্রতিবেদককে জানান, ফেয়ার নিয়োগ হলে সবুজ এবং শিরিনার মধ্যে কেউই নিয়োগ পাবেন বলে মনে হয় না। এদের মধ্যে অনেকেই ৪/৫ লক্ষ দিতে রাজি কিন্তু সুপার এবং সভাপতির বক্তব্য তাতে পানি গরম হয় না।

মাদ্রাসার সুপার মাওঃ শেখ এমদাদুল হক জানান, নিয়োগ ফেয়ার হবে। এছাড়া আমি একা তো আর নিয়োগ দেবো না। নিয়োগের সাথে সভাপতি, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসসহ আরো অনেকে জড়িত থাকেন।

সভাপতি এবং সুপারের যোগসাজশে নিরাপত্তা প্রহরী ও আয়া নিয়োগে দুর্নীতি, অনিয়ম ও বড় অংকের অর্থ আত্মসাৎ বন্ধে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।





০ মন্তব্য

আরও পোস্ট পড়ুন

মতামত দিন